তিন দিনের রিমান্ডে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিনেত্রী শিশু হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তার স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল। তবে কী কারণে হত্যা করেছেন, সে সম্পর্কে এখনো সুস্পষ্ট বক্তব্য পায়নি পুলিশ।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অশান্তির কারণেই শিমুকে হত্যা করেছেন তার স্বামী।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) তদন্তকারী পুলিশ জানায়, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নোবল জানিয়েছেন শ্বাসরোধে তিনি শিমুকে হত্যা করেছেন। লাশের সঙ্গে তিনি রাতভর ছিলেন। পরদিন বন্ধু ফরহাদের সহযোগিতায় শিমুর লাশ বস্তাবন্দি করে দিনভর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান। লাশ ফেলতে না পেরে ব্যর্থ হয়ে আবারও বাসায় ফিরে আসেন। পরে শিমুর বস্তাবন্দি লাশ কেরানীগঞ্জে ফেলে দেন তারা।
তিন দিনের রিমান্ডে নোবেল আরও জানান, লাশ ফেলে দেওয়ার পর কলাবাগান থানায় স্ত্রী নিখোঁজ হয়েছেন জানিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, “নোবেল তার স্ত্রী শিমুকে হত্যার পর সারা রাত লাশের সঙ্গে ছিলেন। পরদিন সকালে বন্ধু ফরহাদকে বাসায় ডেকে আনেন। এরপর বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে নাশতা আনার জন্য বাইরে পাঠান। এই ফাঁকে একটি বস্তায় করে শিমুর লাশ গাড়ির ভেতরে রাখেন। তারপর সুযোগ বুঝে সেই গাড়িতে বাইরে বের হয়ে যান। লাশটি গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়ার জন্য নানা জায়গা খুঁজতে থাকেন। প্রথমে তারা সাভার, আশুলিয়া ও মিরপুর বেড়িবাঁধের দিকে লাশ ফেলার চেষ্টা করেন। সুযোগ না পেয়ে বিকেলে আবারও লাশ গাড়িতে করে বাসায় ফেরেন। এরপর দুই বন্ধু মিলে শিমুর লাশ নিয়ে আবারও বেরিয়ে পড়েন কেরানীগঞ্জের দিকে। সেখানকার আলিয়াপুর এলাকায় লাশটি ফেলে আসেন। মূলত পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে অভিনেত্রী শিমুকে খুন করা হয়েছে। নোবেল ও ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।”
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে শিমুর লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার এসপি মারুফ হোসেন সরদার জানান, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে স্বামী নোবেলের সঙ্গে শিমুর দাম্পত্য কলহ চলছিল। সেই কলহের জেরে শিমুকে হত্যা করা হয়। শিমুর লাশ গুম করতে যে গাড়িটি ব্যবহার করা হয়, তা জব্দ করা হয়েছে। অন্যান্য আলামতও সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার রাতেই ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে শিমুর মরদেহ দাফন করা হয়। ওই দিন রাত ৮টায় গ্রিন রোডের স্টাফ কোয়ার্টারে তার জানাজা হয়।